
মোঃ মোজাম্মিল আলী,সিলেট বিভাগীয় প্রতিনিধি
সুস্থ নির্বাচন করতে হলে আসন্ন পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে না ধরে নিয়ে পরিকল্পনা করছে আওয়ামী লীগ মহাসচিব ড. সুফি সামস্ সাগর। আওয়ামী লীগের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি নির্বাচনে না থাকলে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়, সেটি নিশ্চিত করতে চায় আওয়ামী লীগ। জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে বিএনপি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে তাদের আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাবে। এমন পরিস্থিতিতে পাঁচ সিটির নির্বাচন কোন কৌশলে করা হয়, সেদিকেই নজর থাকবে সবার। ফলে বর্তমান নির্বাচন কমিশন (ইসি) অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সক্ষম, এটা দেখানোর একটি চেষ্টা থাকবে সরকারের। রাজনীতিবিদরা বলছেন, গাজীপুর, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট—এই পাঁচ সিটির নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করার জন্য তাঁদের দল ইসিকে সর্বাত্মক সহায়তা করার অবস্থান নিয়েছে।
রাজনীতিবিদরা জানান, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিরোধীদের দাবি কোনোভাবেই মানবে না আওয়ামী লীগ। তবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যাতে অবাধ ও সুষ্ঠু হয়, সেটা নিশ্চিত করার জন্য আন্তর্জাতিক মহলও বলে আসছে। এর আগে দুটি জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক আছে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের পর স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচনেও সংঘাত, অনিয়মের অভিযোগ ছিল। এ পরিস্থিতিতে পাঁচ সিটি নির্বাচনে ভালো ভোটের দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখানোর চিন্তা সরকারের রয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির ছেড়ে দেওয়া জাতীয় সংসদের আসনের উপনির্বাচনে ভোটারের উপস্থিতি ছিল খুবই কম। বিএনপি ভোটে না এলে ভোটারের উপস্থিতি কমে যাবে, এটা নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তা আছে আওয়ামী লীগের। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ভোট না হওয়ায় ভোটাররা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে সিটি নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি যাতে বেশি হয়, সেই চিন্তাও থাকবে আওয়ামী লীগের। এ ক্ষেত্রে কাউন্সিলর প্রার্থীর ওপর নির্ভর করতে চায় দলটি। প্রয়োজন হলে কাউন্সিলর পদে দলীয়ভাবে প্রার্থী না দিয়ে উন্মুক্ত করে দেওয়ার পরিকল্পনা আছে।
পাঁচ সিটি করপোরেশনে দলের প্রার্থী বাছাইয়ে দলীয় ফরম বিক্রি রাজনৈতিক দলগুলো। ইসি ঘোষিত তফসিল অনুসারে, আগামী ২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভোট গ্রহণ হবে। খুলনা ও বরিশালে ভোট হবে আগামী ১২ জুন। আর ২১ জুন রাজশাহী ও সিলেটের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
পাঁচ সিটির ভোট কেমন হবে জানতে চাইলে বাংলাদেশ হিউম্যানিস্ট পার্টি-বিএইচপির মহাসচিব ড. সুফি সামস্ সাগর বলেন, সরকার ও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে আস্থাহীনতা দ্যিমান রয়েছে তাতে নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকার গঠন করতে হবে এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে সৎশুদ্ধ নেতাদের নির্বাচনে মনোনয়ন দিতে হবে। তাহলে নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে। কিন্তু সরকার যদি দলীয় হয় এবং প্রার্থী যদি ভালো না হয়, প্রার্থীর নেতাকর্মী ও সমর্থকরা যদি দা-কুড়াল বন্দুক নিয়ে ভোটের মাঠে আসে তাহলে নির্বাচন কমিশন কী করবে, সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকার গঠন করতে হবে এবং ভালো প্রার্থীদের মনোনয়ন দিতে হবে। বিএনপি ভোটে অংশ নিলে ভালো একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতা ভোট হবে।