সোমবার, ডিসেম্বর ১১, ২০২৩

মোঃ সাহাবুদ্দিন ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিলেন ,

আপডেট:

মোঃ সাহাদাত হোসেন, ষ্টাফ রিপোর্টার

দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতির শপথ নিলেন মোঃ শাহাবুদ্দিন এসময় শপথ বাক্য পাঠ করান স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। বঙ্গভবনের দরবার হলে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে সংবিধানের রক্ষক সমর্থন ও নিরাপত্তা বিধানের শপথ নিলেন মোঃ সাহাবুদ্দিন।

বিজ্ঞাপন

আজ বেলা ১১টায় দেশের ২২তম এই রাষ্ট্রপতিকে শপথবাক্য পাঠ করান জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।

এর আগে সকাল ১০টায় নতুন রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে বিদায়ী রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বঙ্গভবনের দরবার হলে প্রবেশ করেন।
সে সময় একটি সামরিক ব্যান্ড ও আনুষ্ঠানিক সংগীত পরিবেশন করা হয়।
রাষ্ট্রীয় এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য এবং শতাধিক বিশিষ্ট অতিথি উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের পর নতুন রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন এবং বিদায়ী রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ অফিসের দায়িত্ব পরিবর্তনের অংশ হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজ নিজ আসন বদল করেন। পরে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন ও স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী শপথ নথিতে স্বাক্ষর করেন। রাষ্ট্রপতি শপথ গ্রহণের পর অতিথিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের স্ত্রী রেবেকা সুলতানা, ছেলে আরশাদ আদনান রনিসহ পরিবারের সদস্যরা এবং বিদায়ী রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের পরিবারের সদস্যরা, তাঁর স্ত্রী রাশিদা খানম ও ছেলে সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহমেদ তৌফিকসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
নতুন রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের জন্ম ১৯৪৯ সালে পাবনা জেলায়। ছাত্রজীবনে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ও সভাপতি এবং যুবলীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দৈনিক বাংলার বানীর পাবনা প্রতিনিধি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন বেশ কিছুদিন। রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭২ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর ওই বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি পাবনার নগরবাড়ি ঘাটে ঐতিহাসিক মুজিব বাঁধ নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করতে আসেন। ওই জনসভায় প্রথম বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা যুদ্ধে নির্যাতিত নারীদেরকে বীরাঙ্গনা হিসেবে স্বীকৃতি দেন। আর ঐতিহাসিক ওই জনসভা শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকায় ফেরার সময় মোঃ সাহাবুদ্দিনকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় নিয়ে যান। সে সময় মোঃ সাহাবুদ্দিন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ সাহাবুদ্দিনকে সেই থেকে পাবনার মানুষ জীবন্ত কিংবদন্তী বলে মনে করেন।
সম্প্রতি এ প্রতিনিধির কাছে সেই স্মৃতি চারণ করে মোঃ সাহাবুদ্দিন আবেগ আপ্লুত হন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর মোঃ সাহাবুদ্দিনকে গ্রেফতার করে ৩ বছর বিনাবিচারে কারাগারে বন্দি রাখা হয়। সে সময় তাকে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়।
১৯৭১ সালে তিনি স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক ছিলেন মোঃ সাহাবুদ্দিন। মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। ১৯৮২ সালে তিনি রাজনীতি থেকে বিদায় নিয়ে বিসিএস (আইন) পাশ করে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ পদ থেকে অবসর এর পর তাকে দুদক কমিশনার নিয়োগ করা হয়। মোঃ সাহাবুদ্দিন ১৯৯৫ সালে জুডিশিয়াল সার্ভিস এসোসিয়েশনের মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি ২০০১ সালের নির্বাচনোত্তর সহিংস ঘটনা তদন্তে গঠিত ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি গত ২৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনে প্রচার ও প্রকাশনা কমিটির দায়িত্ব পালন করে প্রশংসিত হন। ২০১১ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মোঃ সাহাবুদ্দিন দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সাবেক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ মোঃ সাহাবুদ্দিন দ্বিতীয়বার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা প্রয়াত এইচটি ইমাম ছিলেন প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির চেয়ারম্যান এবং এইচটি ইমাম মারা গেলে ওই পদে প্রথমবার তাকে নির্বাচিত করা হয়। সর্বশেষ দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে তিনি শপথ গ্ৰহন করেছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:

সর্বাধিক পঠিত