ঢাকা রবিবার, ২৮ মে ২০২৩
১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বাংলা
শিরোনাম:
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির কারণে অর্থপাচার কমবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বিজিবির অভিযানে ১১টি ভারতীয় অবৈধ গরু আটক, জুড়ীতে প্রবাসীর বাড়ী থেকে ৫’শ কেজি রড চুরি: গ্রেপ্তার ৩ , সিসিক মেয়র প্রার্থী,আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ক্যাম্পেইন কমিটি সারে এর উদ্যোগে নির্বাচনী মত বিনিময় সভা, মায়ের হাতে গাজীপুরের চাবি, আমেরিকা থেকে ১কোটি ১০ লক্ষ লিটার সয়াবিন তেল কিনবে সরকার, শ্রীমঙ্গলে ১ হাজার ২০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২, কমলগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় সেনা সদস্য নিহতের ঘটনায় সিএনজি চালক আটক , জুড়ীতে বাবুল আহমেদ বাবুল দাখিল মাদরাসার রাস্তা দখলের অভিযোগ , কালীগঞ্জ প্রেসক্লাবের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা,

বৈষম্যহীন শোষনমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হবে বিএইচপি,

সিলেট বিভাগীয় প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৭:০৯:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ মে ২০২৩ ১৯ বার পড়া হয়েছে

সিলেট বিভাগীয় প্রতিনিধি

অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন আজ ১ মে। ১৮৮৬ সালের এ দিনে, যুক্তরাষ্ট্রে শিকাগোর হে মার্কেটে ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান ১১ জন শ্রমিক। তাঁদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। এই ঘটনা স্মরণে, নানা আয়োজনে প্রতি বছর পালন হয়ে আসছে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস।

পিতা মালিক হওয়ার সুবাদে পুত্রও মালিক হচ্ছে। পিতা চাকর হওয়ার সুবাদে পুত্রও চাকর হচ্ছে। আবহমানকাল ধরে চলে আসছে এই ধারাবাহিকতা। এখানে মেধা, জ্ঞান, সাম্য ও অধিকারের কোনো মূল্যায়ন নেই। এই প্রথা গণতান্ত্রিক নয়, শোষণতান্ত্রিক। এই অশুভ ব্যবস্থাপনা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। শোষণতান্ত্রিক ব্যবসা পরিবর্তন করে শোষনমুক্ত গণতান্ত্রিক ব্যবসার প্রচলন করতে হবে। বেকার তৈরি শিক্ষার পরিবর্তন করে কর্মভিত্তিক শিক্ষা বাস্তবায়ন করতে হবে। ২০২৩ সালের মহান মে দিবসে বাংলাদেশ হিউম্যানিস্ট পার্টি-বিএইচপির এটাই প্রত্যাশা। কর্ম এবং শিক্ষা হলো, মানব জীবনের মূল ভিত্তি। শিক্ষা ও কর্মহীন জীবন যেমন অভিশপ্ত, তেমনি শিক্ষিত বেকার জীবন আরও বেশি অভিশপ্ত। শিক্ষিত বেকার জনগোষ্ঠী রাষ্ট্রের জন্য মারাত্মক ঝুকিপূর্ণ এবং বিপজ্জনক। বেকারত্বের কারণে শিক্ষার ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের আগ্রাহ কমে যাচ্ছে। প্রতি বছর ৩০ লাখ শিক্ষিত বেকার সৃষ্টি হচ্ছে। বেকারত্ব বেড়ে যাওয়া অর্থনীতি এবং সমাজের জন্য অশনি সংকেত। ভবিষ্যতে শিক্ষিত বেকার জনগোষ্ঠী একটি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে। ২০১৮ সালে স্মরণকালের “নিরাপদ সড়ক আন্দোলন হয়। আন্দোলনকারীদের চাপের মুখে নিরাপদ সড়কের জন্য সরকার বিভিন্নমুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু সড়ক নিরাপদ হয়নি। এর মূলে হল, পরিবহণ কর্মীদের বেতন কাঠামো না থাকা ও শিক্ষার অভাব। সড়ক পরিবহনের কর্মীরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। তাদেরকে কর্ম ও শিক্ষার আওতায় আনতে হবে। তারা এক শিফটে গাড়ি চালাবেন এবং অন্য শিফটে ট্রাফিক আইন, গাড়ি চালনায় ড্রাইভারকে সাহায্যকরণ, ভাড়া আদায়ের আচরণ বিধি শিক্ষা, গাড়ির ড্রাইভিং শিক্ষা, গাড়ির চাকা, বডি ইত্যাদি মেরামত, স্থাপন এবং গাড়ির ইঞ্জিনের ওপর বেসিকশিক্ষা গ্রহণ করবেন। এই শিক্ষিত পরিবহন কর্মীদের মাধ্যমে নিরাপদ সড়ক গড়ে উঠবে ইনশাল্লাহ। এজন্য বাস টার্মিনালসমূহে মাল্টিস্টোর ভবন তৈরি করে সেখানে “সড়ক পরিবহন একাডেমী স্থাপন করতে হবে। এই একাডেমী থেকে পরিবহন কর্মীদের বেসিক শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে এবং এই একাডেমীর মাধ্যমে পরিবহন সেক্টর পরিচালনা করতে হবে।
শিল্পপ্রতিষ্ঠানে কর্মভিত্তিক শিক্ষার প্রচলন তরুণ-তরুণীরাই জাতির ভবিষ্যৎ এবং জাতির প্রধান সম্পদ। তরুণদের উন্নয়ন মানে জাতির উন্নয়ন। জাতির ভবিষ্যৎ এই তরুণ জনগোষ্ঠী শিক্ষা শেষে শ্রম বাজারে এসে বড় ধরনের একটি হোঁচট খায়। শ্রম বাজারে চাকুরী পেতে হলে দুই-তিন বছরের অভিজ্ঞতার দরকার হয়। শিক্ষার্থীরা তো নির্ধারিত সায়েন্স, আর্টস কিংবা কমার্স বিষয় নিয়ে পড়ালেখা করেন, অভিজ্ঞতার শর্ত তারা কীভাবে পূরণ করবেন? এছাড়া বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা সনদসর্বস্ব হয়ে পড়েছে। শিক্ষার গুণগত মান ভীষণভাবে নেমে গেছে এবং আরও নেমে যাচ্ছে।

মাস্টার্স পাশ করা ২৬ বছর বয়সি একজন যুবককে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা বেতনের চাকুরীতে যোগদান করতে হয়। পড়ালেখা না জানা একজন দিনমজুরের দৈনিক মজুরী ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। কেউ কোনো কারখানায় ২০ বছর কাজ করলে তার বেতন হয় লক্ষ টাকা। একজন যুবক ২০ বছর পড়ালেখা করে চাকুরীতে যোগদান করলে তার বেতন হয় ১০ হাজার টাকা। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীরা কোথায় যাবে, স্কুলে না কারখানায়?

বেকার শিক্ষিত তরুণ-তরুণীরা পরিবারের, সমাজের এবং সবার কাছে অবহেলিত। তারা পরিবারের অনেক বড় বোঝা, যা পরিবারগুলো সহ্য করতে পারছে না। রাষ্ট্র পড়ালেখা করার জন্য টাকা নিতে পারে, কিন্তু পড়ালেখা শেষ করার পর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারে না। অনেকেই বলেন, ভালো করে পড়ালেখা করলে, ভালো রেজাল্ট করলে, ভালো চাকুরী পাওয়া যায়। আসলে কী পাওয়া যায়? নাকি মোটা অংকের টাকা ঘুষ দিতে হয়! ভালো রেজাল্ট না করলে পাশ দেওয়া হয় কেন?

এরকম বিপজ্জনক পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের উপায় কী? উপায় হলো, শোষনমুক্ত ব্যবসা এবং ‘কর্মভিত্তিক শিক্ষা’। শোষনমুক্ত ব্যবসার প্রচলন এবং কর্মভিত্তিক শিক্ষা চালু করা হলে বেকারত্ব স্বয়ংক্রীয়ভাবে নির্মূল হয়ে যাবে।
যেহেতু কর্মের জন্যই শিক্ষা, সেহেতু শিক্ষার বিষয় বা সিলেবাস হতে হবে “কর্মভিত্তিক”। প্রথম শ্রেণি থেকে এসএসসি পর্যন্ত প্রচলিত বেসিক শিক্ষা অপরিবর্তিত থাকবে। এসএসসি পর্যন্ত শিক্ষার সকল ব্যয়ভার বহন করবে সরকার। এসএসসি পাশ করার পর শিক্ষার্থীরা একইসঙ্গে চাকুরী এবং শিক্ষার জন্য ভর্তি হবেন।
একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা শুধু পণ্য তৈরির কাজ করবেন না; যেসব পণ্য তারা তৈরি করবেন, সেই সব পণ্য কীভাবে, কয়টি ধাপে, কি কি উপাদান ও কি পরিমাণ উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয়, সেসব বিষয়ের ওপর শিক্ষার্থীরা বেসিক শিক্ষা গ্রহণ করবেন।
একইভাবে প্রতিষ্ঠানের ভবন তৈরি, ট্রেড লাইসেন্স করণ, উৎপাদিত পণ্যের মূল্য নির্ধারণ, বাজারজাত করণ, ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ, ঋণ পরিশোধ, রাজস্ব ও ভ্যাট পরিশোধ ইত্যাদি প্রশাসনিক কর্মের পাশাপাশি এসব কর্মবিষয়ের ওপর বেসিক শিক্ষা গ্রহণ করবেন।
এজন্য শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিষ্ঠাকালে সেখানে কর্ম ও শিক্ষার ব্যবস্থা রাখতে হবে; যাতে শিক্ষার্থীরা এক শিফটে অফিস অথবা কারখানায় কাজ করতে পারেন এবং অপর শিফটে যেসব কর্ম তারা অফিস কিংবা কারখানায় করবেন, সেসব বিষয়ের ওপর বেসিক শিক্ষা গ্রহণ করতে পারেন। শিক্ষা শেষে এই প্রতিষ্ঠান থেকেই শিক্ষার্থীরা একইসঙ্গে শিক্ষা ও অভিজ্ঞতার সনদ গ্রহণ করবেন।
এই সনদ দিয়েই তারা স্নাতকোত্তরসহ উচ্চতর শিক্ষার জন্য ভর্তি হবেন। এজন্য এ শিক্ষা উচ্চ মাধ্যমিক থেকে স্নাতক পর্যন্ত সমমানের হবে। এই কর্মভিত্তিক শিক্ষা চালু করা হলে বেকারত্ব ও দুর্নীতি স্বয়ংক্রীয়ভাবে নির্মূল হয়ে যাবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

বৈষম্যহীন শোষনমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হবে বিএইচপি,

আপডেট সময় : ০৭:০৯:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ মে ২০২৩

সিলেট বিভাগীয় প্রতিনিধি

অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন আজ ১ মে। ১৮৮৬ সালের এ দিনে, যুক্তরাষ্ট্রে শিকাগোর হে মার্কেটে ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান ১১ জন শ্রমিক। তাঁদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। এই ঘটনা স্মরণে, নানা আয়োজনে প্রতি বছর পালন হয়ে আসছে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস।

পিতা মালিক হওয়ার সুবাদে পুত্রও মালিক হচ্ছে। পিতা চাকর হওয়ার সুবাদে পুত্রও চাকর হচ্ছে। আবহমানকাল ধরে চলে আসছে এই ধারাবাহিকতা। এখানে মেধা, জ্ঞান, সাম্য ও অধিকারের কোনো মূল্যায়ন নেই। এই প্রথা গণতান্ত্রিক নয়, শোষণতান্ত্রিক। এই অশুভ ব্যবস্থাপনা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। শোষণতান্ত্রিক ব্যবসা পরিবর্তন করে শোষনমুক্ত গণতান্ত্রিক ব্যবসার প্রচলন করতে হবে। বেকার তৈরি শিক্ষার পরিবর্তন করে কর্মভিত্তিক শিক্ষা বাস্তবায়ন করতে হবে। ২০২৩ সালের মহান মে দিবসে বাংলাদেশ হিউম্যানিস্ট পার্টি-বিএইচপির এটাই প্রত্যাশা। কর্ম এবং শিক্ষা হলো, মানব জীবনের মূল ভিত্তি। শিক্ষা ও কর্মহীন জীবন যেমন অভিশপ্ত, তেমনি শিক্ষিত বেকার জীবন আরও বেশি অভিশপ্ত। শিক্ষিত বেকার জনগোষ্ঠী রাষ্ট্রের জন্য মারাত্মক ঝুকিপূর্ণ এবং বিপজ্জনক। বেকারত্বের কারণে শিক্ষার ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের আগ্রাহ কমে যাচ্ছে। প্রতি বছর ৩০ লাখ শিক্ষিত বেকার সৃষ্টি হচ্ছে। বেকারত্ব বেড়ে যাওয়া অর্থনীতি এবং সমাজের জন্য অশনি সংকেত। ভবিষ্যতে শিক্ষিত বেকার জনগোষ্ঠী একটি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে। ২০১৮ সালে স্মরণকালের “নিরাপদ সড়ক আন্দোলন হয়। আন্দোলনকারীদের চাপের মুখে নিরাপদ সড়কের জন্য সরকার বিভিন্নমুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু সড়ক নিরাপদ হয়নি। এর মূলে হল, পরিবহণ কর্মীদের বেতন কাঠামো না থাকা ও শিক্ষার অভাব। সড়ক পরিবহনের কর্মীরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। তাদেরকে কর্ম ও শিক্ষার আওতায় আনতে হবে। তারা এক শিফটে গাড়ি চালাবেন এবং অন্য শিফটে ট্রাফিক আইন, গাড়ি চালনায় ড্রাইভারকে সাহায্যকরণ, ভাড়া আদায়ের আচরণ বিধি শিক্ষা, গাড়ির ড্রাইভিং শিক্ষা, গাড়ির চাকা, বডি ইত্যাদি মেরামত, স্থাপন এবং গাড়ির ইঞ্জিনের ওপর বেসিকশিক্ষা গ্রহণ করবেন। এই শিক্ষিত পরিবহন কর্মীদের মাধ্যমে নিরাপদ সড়ক গড়ে উঠবে ইনশাল্লাহ। এজন্য বাস টার্মিনালসমূহে মাল্টিস্টোর ভবন তৈরি করে সেখানে “সড়ক পরিবহন একাডেমী স্থাপন করতে হবে। এই একাডেমী থেকে পরিবহন কর্মীদের বেসিক শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে এবং এই একাডেমীর মাধ্যমে পরিবহন সেক্টর পরিচালনা করতে হবে।
শিল্পপ্রতিষ্ঠানে কর্মভিত্তিক শিক্ষার প্রচলন তরুণ-তরুণীরাই জাতির ভবিষ্যৎ এবং জাতির প্রধান সম্পদ। তরুণদের উন্নয়ন মানে জাতির উন্নয়ন। জাতির ভবিষ্যৎ এই তরুণ জনগোষ্ঠী শিক্ষা শেষে শ্রম বাজারে এসে বড় ধরনের একটি হোঁচট খায়। শ্রম বাজারে চাকুরী পেতে হলে দুই-তিন বছরের অভিজ্ঞতার দরকার হয়। শিক্ষার্থীরা তো নির্ধারিত সায়েন্স, আর্টস কিংবা কমার্স বিষয় নিয়ে পড়ালেখা করেন, অভিজ্ঞতার শর্ত তারা কীভাবে পূরণ করবেন? এছাড়া বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা সনদসর্বস্ব হয়ে পড়েছে। শিক্ষার গুণগত মান ভীষণভাবে নেমে গেছে এবং আরও নেমে যাচ্ছে।

মাস্টার্স পাশ করা ২৬ বছর বয়সি একজন যুবককে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা বেতনের চাকুরীতে যোগদান করতে হয়। পড়ালেখা না জানা একজন দিনমজুরের দৈনিক মজুরী ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। কেউ কোনো কারখানায় ২০ বছর কাজ করলে তার বেতন হয় লক্ষ টাকা। একজন যুবক ২০ বছর পড়ালেখা করে চাকুরীতে যোগদান করলে তার বেতন হয় ১০ হাজার টাকা। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীরা কোথায় যাবে, স্কুলে না কারখানায়?

বেকার শিক্ষিত তরুণ-তরুণীরা পরিবারের, সমাজের এবং সবার কাছে অবহেলিত। তারা পরিবারের অনেক বড় বোঝা, যা পরিবারগুলো সহ্য করতে পারছে না। রাষ্ট্র পড়ালেখা করার জন্য টাকা নিতে পারে, কিন্তু পড়ালেখা শেষ করার পর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারে না। অনেকেই বলেন, ভালো করে পড়ালেখা করলে, ভালো রেজাল্ট করলে, ভালো চাকুরী পাওয়া যায়। আসলে কী পাওয়া যায়? নাকি মোটা অংকের টাকা ঘুষ দিতে হয়! ভালো রেজাল্ট না করলে পাশ দেওয়া হয় কেন?

এরকম বিপজ্জনক পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের উপায় কী? উপায় হলো, শোষনমুক্ত ব্যবসা এবং ‘কর্মভিত্তিক শিক্ষা’। শোষনমুক্ত ব্যবসার প্রচলন এবং কর্মভিত্তিক শিক্ষা চালু করা হলে বেকারত্ব স্বয়ংক্রীয়ভাবে নির্মূল হয়ে যাবে।
যেহেতু কর্মের জন্যই শিক্ষা, সেহেতু শিক্ষার বিষয় বা সিলেবাস হতে হবে “কর্মভিত্তিক”। প্রথম শ্রেণি থেকে এসএসসি পর্যন্ত প্রচলিত বেসিক শিক্ষা অপরিবর্তিত থাকবে। এসএসসি পর্যন্ত শিক্ষার সকল ব্যয়ভার বহন করবে সরকার। এসএসসি পাশ করার পর শিক্ষার্থীরা একইসঙ্গে চাকুরী এবং শিক্ষার জন্য ভর্তি হবেন।
একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা শুধু পণ্য তৈরির কাজ করবেন না; যেসব পণ্য তারা তৈরি করবেন, সেই সব পণ্য কীভাবে, কয়টি ধাপে, কি কি উপাদান ও কি পরিমাণ উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয়, সেসব বিষয়ের ওপর শিক্ষার্থীরা বেসিক শিক্ষা গ্রহণ করবেন।
একইভাবে প্রতিষ্ঠানের ভবন তৈরি, ট্রেড লাইসেন্স করণ, উৎপাদিত পণ্যের মূল্য নির্ধারণ, বাজারজাত করণ, ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ, ঋণ পরিশোধ, রাজস্ব ও ভ্যাট পরিশোধ ইত্যাদি প্রশাসনিক কর্মের পাশাপাশি এসব কর্মবিষয়ের ওপর বেসিক শিক্ষা গ্রহণ করবেন।
এজন্য শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিষ্ঠাকালে সেখানে কর্ম ও শিক্ষার ব্যবস্থা রাখতে হবে; যাতে শিক্ষার্থীরা এক শিফটে অফিস অথবা কারখানায় কাজ করতে পারেন এবং অপর শিফটে যেসব কর্ম তারা অফিস কিংবা কারখানায় করবেন, সেসব বিষয়ের ওপর বেসিক শিক্ষা গ্রহণ করতে পারেন। শিক্ষা শেষে এই প্রতিষ্ঠান থেকেই শিক্ষার্থীরা একইসঙ্গে শিক্ষা ও অভিজ্ঞতার সনদ গ্রহণ করবেন।
এই সনদ দিয়েই তারা স্নাতকোত্তরসহ উচ্চতর শিক্ষার জন্য ভর্তি হবেন। এজন্য এ শিক্ষা উচ্চ মাধ্যমিক থেকে স্নাতক পর্যন্ত সমমানের হবে। এই কর্মভিত্তিক শিক্ষা চালু করা হলে বেকারত্ব ও দুর্নীতি স্বয়ংক্রীয়ভাবে নির্মূল হয়ে যাবে।