ঢাকা রবিবার, ২৮ মে ২০২৩
১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বাংলা
শিরোনাম:
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির কারণে অর্থপাচার কমবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বিজিবির অভিযানে ১১টি ভারতীয় অবৈধ গরু আটক, জুড়ীতে প্রবাসীর বাড়ী থেকে ৫’শ কেজি রড চুরি: গ্রেপ্তার ৩ , সিসিক মেয়র প্রার্থী,আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ক্যাম্পেইন কমিটি সারে এর উদ্যোগে নির্বাচনী মত বিনিময় সভা, মায়ের হাতে গাজীপুরের চাবি, আমেরিকা থেকে ১কোটি ১০ লক্ষ লিটার সয়াবিন তেল কিনবে সরকার, শ্রীমঙ্গলে ১ হাজার ২০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২, কমলগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় সেনা সদস্য নিহতের ঘটনায় সিএনজি চালক আটক , জুড়ীতে বাবুল আহমেদ বাবুল দাখিল মাদরাসার রাস্তা দখলের অভিযোগ , কালীগঞ্জ প্রেসক্লাবের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা,

গল্পের শিরোনাম, দিলে খোদায় বুদ্ধিমতি হতে পারে শিল্পপতি।

লেখক কবি মুকলেছ উদ্দিন,
  • আপডেট সময় : ০১:৪১:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ মে ২০২৩ ২৫ বার পড়া হয়েছে

লেখক কবি মুকলেছ উদ্দিন

তারিখ ০৫/০৫/২০২৩ই
এক ছিল বোকা জুলা খুব গরিব দিনমজুরী করে দিন চলে। একদিন বোকা জুলা তার ছাল ছাউনির জন্য চালে উঠে। আর এদিকে বোকা জুলার বউ রুটি তৈয়ার করে। জুলা সেই রুটি চালের ফাঁক দিয়ে দেখে। জুলা চালের উপর থেকে গুনেছে তার বউ ষাটটি রুটি তৈরি করেছে। তখন জুলা তার বউকে বলতে লাগলো বউ আমি কিন্তু বলে দিতে পারব তুমি কয়টি রুটি তৈয়ার করেছ। জুলার বউ অবাক হয়ে বলল কি তুমি বলতে পারবে তাহলে কি তুমি পন্ডিত হয়ে গেছ বলতো দেখি
জোলা বলল।
তুমি সাতটি রুটি তৈয়ার করেছ ।তখনই জুলার বউ ঘর থেকে দৌড়ে বের হয়ে চিৎকার করে বলতে লাগলো আমার জেলা পন্ডিত হয়েছেগ সে না দেখে সবকিছু বলতে পারে। জুলা পন্ডিত হয়ে গেছে ।সেটাও একটা জোলার দেশ ।কথাটা সবাই মেনে নিল সারাদেশে প্রচার করে দিল জোলা পন্ডিত হয়েছে। দুইদিন পর এক গৃহস্ত এসে বলল পন্ডিত মশাই আমার একটা গাভী হারিয়ে গেছে
এই দুইশত টাকা দিলাম আপনার খরচ। আরো টাকা দিব যদি গাভিটা পাই। এই বলে লোকটা ২০০ টাকা দিয়ে চলে গেল বোকা জুলা তো পড়েছে ফাঁদে আগামীকালকে লোকটা আসলে কি জবাব দিবে সে তো কিছুই জানে না। বউকে ডেকে বলল। বউ তুমি তো যে কাজ করেছ এদেশে আর থাকা যাবে না ।চলো কাল সকালে বাড়ির দিকে পালিয়ে যাই। তাই সিদ্ধান্ত হল। এদিকে সমালোচনা চলছে জুলা বড় পন্ডিত সে বলতেই পারবে গাভীটা কোথায় আছে। এদিকে চুর গাভী নিয়ে পড়েছে বিপদে। এখন কি আর করবে? জুলা পন্ডিত সব বলে দিবে। তাহলে তো মান সম্মানও যাবে বিচারে সাজা হবে। এমনিভাবে চিন্তাভাবনা করে এই রাতেই গাভিটা পণ্ডিতের বাড়িতে ফেরত দেয়। এবং তাকে নাম না বলার জন্য জুলাকে এক হাজার টাকা দেয়। জুলার বউ বলল কেমন ঠিক আছে না তারা হাসতে হাসতে অবাক। এখন আর জুলার অভাব নাই কাজ করতে হয় না প্রতিদিন একজন না একজন আসে আর ঠিক মতোই হারানো জিনিস তারা পেয়ে যায়। মারাত্মক সমালোচনা শুরু হয়ে গেছে কেউ কিছু গোপন রাখতে পারেনা। জুলা সব বলে দিতে পারে। হঠাৎ একদিন রাজার মেয়ের হাড় চু্রি হয়ে যায়। রাজা লুক পাঠালো জুলার কাছে জুলাকে রাজবাড়ীতে নিয়ে আসা হলো রাজা বলল তুমি আমার মেয়ের হার খুঁজে বের করে দিবে তোমাকে আমি আমার রাজ্যের অর্ধেক অংশ দিয়ে দিব। আর যদি না পার তোমাকে শূলে চড়াবো। জূলাত‌ একদম টাইট হয়ে গেছে কি আর করবে কান্না শুরু করল । জুলা এবং তার বউ বুদ্ধি করে রাজাকে একটা কাজ করতে বলল
রাজা মশাই আপনি রাজ্যের মধ্যে ঘোষণা করে দেন যে চুরি করেছে সেই চোর এবং তার পরিবারের যত লোক সকলেই সাত দিনের মধ্যে কলা জ্বরে মৃত্যুবরণ করবে। তারা কেউ বাঁচবে না এরপর জুলা পন্ডিতকে দোষ দিলে কোন কাজ হবে না। রাজা ঘোষণা করে দিল। জুলার সাহস আস্তে আস্তে বাড়তে লাগলো। রাজাকে বলল আমি যে ঘরে থাকবো সেই ঘরে কে আসবে কে যাবে আপনারা কেউ তাকে জিজ্ঞেস করবেন না। আমি আমার কাজ করে যাব। আর পাড়া গ্রামের লোক লাগিয়ে দেন প্রত্যেকদিন সবার ঘরে ঘরে চেক করবে কোন ঘরে লোক মরেছে। কালা জ্বরে। জুলার আদেশ রাজা তাই করলো। ঘরে ঘরে প্রতিদিন তালাশ করে যাচ্ছে। তিন দিন অতিবাহিত হয়ে গেল যে চুর সে ভাবতে লাগলো একটা হাড়ের জন্য ঘরের সকলে মরে যাবে না তা হতে পারে না আমি হারটা যেভাবে হোক ফেরত দিবো । তাই সে সিদ্ধান্ত নিল রাত্রে অন্ধকারে জুলা পন্ডিতের কাছে দিয়ে আসবে। চুর তাই করলো রাতের অন্ধকারে সেই হার নিয়ে জুলার কাছে গেল। হাতে পায়ে ধরে জোলার কাছ থেকে মাপ নিল আর জুলাকে পাঁচ হাজার টাকা দিল নাম না বলার জন্য ।যেন কোন অবস্থাতেই রাজার কাছে তার নাম প্রকাশ না করে। জুলা ওয়াদা করল আর বলল এই হারটা তুমি ওই গোয়াল ঘরের পিছনে গোবরের ঝাকে দক্ষিণ পাশে লাউ গাছের শিকড়ের কাছে পুতে রাখো। চোর ব্যাটা তাই করল। সকাল হতে না হতেই জুলা চিৎকার করে মন্ত্র পাঠ করতে লাগলো। অনেকক্ষণ ভনর ভনর করছে কিছুই বুঝা যায় না তবে একটি কথাবুঝা যাচ্ছে

গোবর ঝাকের দক্ষিণ পাশে লাউ গাছের তলে।
লক্ষ টাকার সোনার হার জল জল করে জ্বলে।

এই কথাটি বারবার চিৎকার করে বলতে লাগলো।

তখন রাজা এসে তাকে বলল পন্ডিত কি বলছো
পন্ডিত বলল শুনেন নাই

রাজাকে ডেকে নিয়ে বলিল কানে
লাউ গাছের তলে হাড় আছে সেখানে।

তখন রাজা সেখানে গিয়ে ঠিকই তার হার পেয়ে গেল

বোকা জুলার কপাল খুলে গেল
রাজার পাশে রাজ আসনে বসিল।

দিলে খুদা বুদ্ধিমতি
হতে পারে শিল্পপতি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

গল্পের শিরোনাম, দিলে খোদায় বুদ্ধিমতি হতে পারে শিল্পপতি।

আপডেট সময় : ০১:৪১:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ মে ২০২৩

লেখক কবি মুকলেছ উদ্দিন

তারিখ ০৫/০৫/২০২৩ই
এক ছিল বোকা জুলা খুব গরিব দিনমজুরী করে দিন চলে। একদিন বোকা জুলা তার ছাল ছাউনির জন্য চালে উঠে। আর এদিকে বোকা জুলার বউ রুটি তৈয়ার করে। জুলা সেই রুটি চালের ফাঁক দিয়ে দেখে। জুলা চালের উপর থেকে গুনেছে তার বউ ষাটটি রুটি তৈরি করেছে। তখন জুলা তার বউকে বলতে লাগলো বউ আমি কিন্তু বলে দিতে পারব তুমি কয়টি রুটি তৈয়ার করেছ। জুলার বউ অবাক হয়ে বলল কি তুমি বলতে পারবে তাহলে কি তুমি পন্ডিত হয়ে গেছ বলতো দেখি
জোলা বলল।
তুমি সাতটি রুটি তৈয়ার করেছ ।তখনই জুলার বউ ঘর থেকে দৌড়ে বের হয়ে চিৎকার করে বলতে লাগলো আমার জেলা পন্ডিত হয়েছেগ সে না দেখে সবকিছু বলতে পারে। জুলা পন্ডিত হয়ে গেছে ।সেটাও একটা জোলার দেশ ।কথাটা সবাই মেনে নিল সারাদেশে প্রচার করে দিল জোলা পন্ডিত হয়েছে। দুইদিন পর এক গৃহস্ত এসে বলল পন্ডিত মশাই আমার একটা গাভী হারিয়ে গেছে
এই দুইশত টাকা দিলাম আপনার খরচ। আরো টাকা দিব যদি গাভিটা পাই। এই বলে লোকটা ২০০ টাকা দিয়ে চলে গেল বোকা জুলা তো পড়েছে ফাঁদে আগামীকালকে লোকটা আসলে কি জবাব দিবে সে তো কিছুই জানে না। বউকে ডেকে বলল। বউ তুমি তো যে কাজ করেছ এদেশে আর থাকা যাবে না ।চলো কাল সকালে বাড়ির দিকে পালিয়ে যাই। তাই সিদ্ধান্ত হল। এদিকে সমালোচনা চলছে জুলা বড় পন্ডিত সে বলতেই পারবে গাভীটা কোথায় আছে। এদিকে চুর গাভী নিয়ে পড়েছে বিপদে। এখন কি আর করবে? জুলা পন্ডিত সব বলে দিবে। তাহলে তো মান সম্মানও যাবে বিচারে সাজা হবে। এমনিভাবে চিন্তাভাবনা করে এই রাতেই গাভিটা পণ্ডিতের বাড়িতে ফেরত দেয়। এবং তাকে নাম না বলার জন্য জুলাকে এক হাজার টাকা দেয়। জুলার বউ বলল কেমন ঠিক আছে না তারা হাসতে হাসতে অবাক। এখন আর জুলার অভাব নাই কাজ করতে হয় না প্রতিদিন একজন না একজন আসে আর ঠিক মতোই হারানো জিনিস তারা পেয়ে যায়। মারাত্মক সমালোচনা শুরু হয়ে গেছে কেউ কিছু গোপন রাখতে পারেনা। জুলা সব বলে দিতে পারে। হঠাৎ একদিন রাজার মেয়ের হাড় চু্রি হয়ে যায়। রাজা লুক পাঠালো জুলার কাছে জুলাকে রাজবাড়ীতে নিয়ে আসা হলো রাজা বলল তুমি আমার মেয়ের হার খুঁজে বের করে দিবে তোমাকে আমি আমার রাজ্যের অর্ধেক অংশ দিয়ে দিব। আর যদি না পার তোমাকে শূলে চড়াবো। জূলাত‌ একদম টাইট হয়ে গেছে কি আর করবে কান্না শুরু করল । জুলা এবং তার বউ বুদ্ধি করে রাজাকে একটা কাজ করতে বলল
রাজা মশাই আপনি রাজ্যের মধ্যে ঘোষণা করে দেন যে চুরি করেছে সেই চোর এবং তার পরিবারের যত লোক সকলেই সাত দিনের মধ্যে কলা জ্বরে মৃত্যুবরণ করবে। তারা কেউ বাঁচবে না এরপর জুলা পন্ডিতকে দোষ দিলে কোন কাজ হবে না। রাজা ঘোষণা করে দিল। জুলার সাহস আস্তে আস্তে বাড়তে লাগলো। রাজাকে বলল আমি যে ঘরে থাকবো সেই ঘরে কে আসবে কে যাবে আপনারা কেউ তাকে জিজ্ঞেস করবেন না। আমি আমার কাজ করে যাব। আর পাড়া গ্রামের লোক লাগিয়ে দেন প্রত্যেকদিন সবার ঘরে ঘরে চেক করবে কোন ঘরে লোক মরেছে। কালা জ্বরে। জুলার আদেশ রাজা তাই করলো। ঘরে ঘরে প্রতিদিন তালাশ করে যাচ্ছে। তিন দিন অতিবাহিত হয়ে গেল যে চুর সে ভাবতে লাগলো একটা হাড়ের জন্য ঘরের সকলে মরে যাবে না তা হতে পারে না আমি হারটা যেভাবে হোক ফেরত দিবো । তাই সে সিদ্ধান্ত নিল রাত্রে অন্ধকারে জুলা পন্ডিতের কাছে দিয়ে আসবে। চুর তাই করলো রাতের অন্ধকারে সেই হার নিয়ে জুলার কাছে গেল। হাতে পায়ে ধরে জোলার কাছ থেকে মাপ নিল আর জুলাকে পাঁচ হাজার টাকা দিল নাম না বলার জন্য ।যেন কোন অবস্থাতেই রাজার কাছে তার নাম প্রকাশ না করে। জুলা ওয়াদা করল আর বলল এই হারটা তুমি ওই গোয়াল ঘরের পিছনে গোবরের ঝাকে দক্ষিণ পাশে লাউ গাছের শিকড়ের কাছে পুতে রাখো। চোর ব্যাটা তাই করল। সকাল হতে না হতেই জুলা চিৎকার করে মন্ত্র পাঠ করতে লাগলো। অনেকক্ষণ ভনর ভনর করছে কিছুই বুঝা যায় না তবে একটি কথাবুঝা যাচ্ছে

গোবর ঝাকের দক্ষিণ পাশে লাউ গাছের তলে।
লক্ষ টাকার সোনার হার জল জল করে জ্বলে।

এই কথাটি বারবার চিৎকার করে বলতে লাগলো।

তখন রাজা এসে তাকে বলল পন্ডিত কি বলছো
পন্ডিত বলল শুনেন নাই

রাজাকে ডেকে নিয়ে বলিল কানে
লাউ গাছের তলে হাড় আছে সেখানে।

তখন রাজা সেখানে গিয়ে ঠিকই তার হার পেয়ে গেল

বোকা জুলার কপাল খুলে গেল
রাজার পাশে রাজ আসনে বসিল।

দিলে খুদা বুদ্ধিমতি
হতে পারে শিল্পপতি।