শনিবার, ডিসেম্বর ২, ২০২৩

রাজবাড়ী জেলার বহরপুরে জমে উঠেছে গ্ৰামীন শিল্পপণ্য মেলা,

আপডেট:

রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধি

রাজবাড়ী জেলার বহরপুরে জমে উঠেছে গ্রামীন শিল্পপণ্য মেলা। দৃষ্টিনন্দন পানির ও আলোকসজ্জায় সজ্জিত গ্রামীন শিল্পপন্য মেলায়, প্রতিদিনই ভিড় করছেন দর্শনার্থী ও ক্রেতারা। হাজারো মানুষের পদচারণায় মুখর মেলা প্রাঙ্গন।
মেলা ঘুরে দেখা যায়, দলে দলে মেলায় আসছেন দর্শনার্থীরা। শিশু-কিশোর কিংবা বৃদ্ধ, পরিবারের সবাই প্রিয়জনদের সাথে একটু বিনোদন পেতেই আসছেন গ্রামীন শিল্পপণ্য মেলায়। রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুরের ঐতিহ্যবাহী রেলওয়ে খেলার মাঠে চলছে এ মেলা । গত ৩০ শে সেপ্টেম্বর এ মেলার উদ্বোধন করেন বালিয়াকান্দি উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা এম এ হান্নান এ সময় উপস্থিত ছিলেন মেলার আয়োজক বালিয়াকান্দি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার এম এ মতিন ফেরদৌস সহ স্হানীয় গন্যমান্য বাক্তিবর্গ। বহরপুরে এমন মেলার আয়োজনে খুশি অত্র এলাকার দর্শনার্থীরা।
জানা যায়, মেলায় ছোট-বড় ৫০/৬০ স্টল ঠাঁই পেয়েছে। এসব স্টলে মিলছে বাহারি শোপিস, জুয়েলারি সেট, কুটিরশিল্প জাতীয় পণ্য, বিভিন্ন খারারের দোকান, বাচ্চাদের খেলনা, কোট ব্লেজার,টিশার্ট, নিত্যপ্রয়োজনীয় তৈজসপত্র, ঘড়ি, বুটিকসের টুপিস, থ্রি-পিসসহ নানান ধরনের পণ্য। বিশেষ করে নারীদের গহনার পাশাপাশি শিশুদের খেলনার দোকানের আধিক্য দেখা গেছে। আর শিশুদের জন্য রাখা হয়েছে নাগরদোলা, ভূতেরবাড়ী জাম্পিংখেলা,ড্রাগন ও কার্টুন ট্রেন, ডিজিটাল নৌকা, কিডস স্লিপার, সহ মজাদার বিনোদনমূলক ৮টি আকর্ষণ। সকল শ্রেনী দর্শকদের জন্য রয়েছে বাংলার এতিহ্য সার্কাস খেলা। এছাড়া মেলায় আগত দর্শনার্থীদের জন্য প্রতিদিনই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে আসা ক্রেতাদেরও ভিড় বাড়ছে প্রতিদিনই। তবে মেলা উদ্বোধনের পর থেকে ৪/৫ দিন অতিরিক্ত বৃষ্টির কারনে মেলায় বেচা-কেনা কমে যাওয়ায় দোকানীরা পড়েছেন বিপাকে, উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা আশা করছেন ক্ষতি পোষাতে অত্র মেলার সময় সীমা আরো ১৫ দিন বৃদ্ধি করা হলে তারা তাদের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবেন। উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা সময়সীমা বৃদ্ধির জন্য প্রশাসনের নিকট বিনিত অনুরোধ জানিয়েছেন।
মেলায় ঘুরতে আসা ক্রেতা সকিনা বেগম বলেন, রাজধানী ঢাকার অনেক পণ্য এ মেলায় পাওয়া যাচ্ছে। গ্রামীন শিল্পপন্য মেলা সবাইকে আনন্দ দিচ্ছে। স্বল্পদামে সবকিছু একটি মাঠের মধ্যে পাওয়ায় ভালো লাগছে। আমরা গরীব মানুষ ছেলেমেয়েদের আমরা দূরে কোথাও বিনোদনের জন্য বেড়াতে নিয়ে যেতে পারি না ,এখানে তারা আনন্দ করছে এজন্য ভালো লাগছে।
আরেক ক্রেতা অমিতা রায় বলেন, কয়েকদিন পরেই আমাদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজা এ মেলায় স্বল্পদামে আমরা শাড়ী,থ্রি পিস, টু- পিস ও নানা প্রকার জুয়েলারি পন্য ক্রয় করতে পারছি, এ মেলা দূর্গাপুজা শেষ হওয়া পর্যন্ত অব্যহত থাকলে আমাদের শিশুরা অনেক আনন্দ – বিনোদন করতে পারবে।
দর্শনার্থী সোনিয়া আক্তার বলেন, পরিবারের সবাই একসাথে মেলায় এসেছি। কেনাকাটার সাথে বিনোদনও পেয়েছি। খুব আনন্দিত সবাই। চটপটি ও মিনি চাইনিস স্বত্বাধিকারী
মাসুদ রানা বলেন প্রশাসন সবদিকে সহযোগিতা করছে। শান্তিপূর্ণভাবে মেলা চলছে।
আরেকজন বিক্রেতা আবুল মিয়া বলেন, দিনে দিনে ক্রেতা বাড়ছে, দূর্গাপূজা শেষ হওয়া পর্যন্ত মেলা চললে, আশা করছি বেচাকেনা আরো বারবে।
গ্রামীন শিল্পপন্য মেলার তদারককারী মেসার্স সামিউল এন্টারপ্রাইজ (ইভেন ম্যানেজমেন্ট) এর স্বত্বাধিকারী মো মনির আহম্মদ জানান, দেশের বিভিন্ন স্হান থেকে তাঁত, কুটির, বুটিকসহ বিভিন্ন দোকানীরা এতে অংশ নেয়ার মেলায় প্রাণবন্ত ফিরেছে। মেলা উদ্বোধনের পর থেকে প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারনে ব্যবসায়ীরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত তাই ক্ষতি পোষাতে আসন্ন দূর্গাপূজা শেষ হওয়া পযর্ন্ত সময়সীমা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। প্রতিদিন বেলা ১১ থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা এ মেলা। দর্শণার্থীদের ২০ টাকা ফি দিয়ে মেলায় প্রবেশ করতে হচ্ছে। এ প্রবেশ টিকিটের উপরেই প্রতিদিন দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন পুরস্কার। গ্রামীন শিল্পপন্য মেলার আয়োজক বালিয়াকান্দি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা এম এ মতিন ফেরদৌস বলেন এই মেলা শহরের সুবিধা থেকে বঞ্চিত, গ্রাম অঞ্চলের মানুষদের বিনোদন দেয়াই মূল্য উদ্দেশ্য। আয়োজিত এ মেলা জেলার ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সুনাম বয়ে আনবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:

সর্বাধিক পঠিত